স্টেশন
তুই কখনো আমাকে চাসনি,না চেয়েই আমি পুরোটা তোর।
অথচ সেজুতি জানেনা তার পাবার অহংকারে কেবলই ফাঁকি।
স্টেশনের ক্ষীণ আলোয় চমকে উঠলাম, ভুল দেখছিনা তো!
তুই এসে সহাস্যে জনতে চাইলি “কেমন আছ অরুণদা? “
গলায় ঢেলা পাকানো অন্ধকার ঠেলে কেবল বলতে পারলাম “ভালো “!
একমুহুর্তের জন্য কী পৃথিবীটা এসে থমকে রইলো আমার চারপাশে?
বুকের ভেতর এতো কাছাকাছি থাকিস তুই
অথচ হাতছানির দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকা তোকে মনে হলো আলোকবর্ষ।
তোর কপালের গাঢ় নীল টিপ, চোখে মায়া কাজল আর পরিপাটি শাড়ির আবরণে সুখের ছাপ স্পষ্ট।
আমার সামনে দাঁড়ানো তুই যেনো অন্য এক মানবী!
যাকে আমি কখনো চিনিনি,হয়তোবা জানিওনি কখনো।
আমার ভেতরে লালিত সেই তুই যে আজও বড্ড ছেলেমানুষ!
যে সেজুতিকে ছাপিয়ে দাপিয়ে বেড়াতো আমাকে।
যে অদম্য সাহসে একঘর লোকের সামনে সেজুতিকে বলে বসেছিলো “আমি তোমার বরটাকে বড্ড ভালোবাসি গো “।
আমার ভেতরে লালিত তুই আজও সেই তুই,অবেলায় আমাকে ঘেটে দিয়ে যাওয়া তুই।
তখন তোর বয়স কতোইবা! ষোলো কী সতেরো!
তোর ছেলেমানুষী কত কথার বিহ্বল আবেগ আমাকে নিয়েছে তোর দিকে
অন্যায় জেনেও দুর্নিবার আকর্ষণে এগিয়েছি তোর পথে
গভীর থেকে গভীর মগ্নতায়।
বুকের কোরকে তিলতিল করে সাজিয়েছি ভালোবাসা।
যখন বুঝেছি আর পথ নেই
তখন থেকে আমার মধ্যে অবিরল কাঁচ ভেঙে যাচ্ছে ঝনঝন শব্দে।
নিজেকে আমি সামলে রাখতে পেরেছি খুব
কেবল মনটাকে সামলাতে পারিনি এক রত্তির।
আমার সামনে দাঁড়ানো তোকে ট্রেনটা আবার নিয়ে যাবে বহুদূর
যেমন করে বহুদিন আগে নিয়ে গিয়েছিলো তোর মাথার সিঁদুর!