silhouette of flying bird

পাখিদের দূরত্ব

দূরত্ব হয়ে গেলে আমাদের মধ্যে একটা পাখি ওড়ে। শিস দেয়, ডানা ঝাপ্টায়, ছটফটায়। এই যে সকাল, সকালের গায়ে লেগে থাকা আদর আদর ঘুম এটুকুর পর মানুষ বড্ড একা।

black and silver fountain pen

যাপিত অক্ষরমালা

চিঠির পৃষ্ঠা থেকে ক্রমশ ঝুলে পড়েছে অক্ষরমালাযেনো এরচেয়ে সহজ গন্তব্য নেইনাবছে দুপুর অতৃপ্তির কোষাগারকোথাও সূর্য শকুনের ডানার কাছাকাছিকোথাও চাঁদ বনের উচু গাছের মিত্রএতো উচ্চতাপ্রিয় ধারণায় আমি নিম্নগামী বিন্দুছিটকে গেছি বৃত্তের বর্তূল ঘূর্ণনেআমি প্রেমিকপ্রেমের তরল থেকে জীবন নিংড়ে নিতে ভুল করে গলে গেছি সাবানের ফেনায়উঠে গেছিস তুই যেনো পূণ্য হলো স্নানবুঝি কবিতা ছলে তোর হাত ধরতে…

a person walking in a dark alley

পার্বন বেলা

অনেক স্রোতের পর এখানে স্থিতধী হাওয়াদুরন্ত সেসব ঢেউ পড়ে আছে শৈশবের দাওয়ায়এখন বেলা অস্তগামী, ফিকে হয়ে আসা রঙেদৈর্ঘ্য প্রস্থ বেড়েছে জামার,বেড়েছে দূরত্ব আনন্দবেলার এখনো এখানে বাবা বাড়ি ফেরেন ব্যাগভর্তি হুলস্থুল নিয়েবাড়ি থেকে ওইটুকুই তো দূরত্ব ঈদগাহ’রহঠাৎ পরিচিত কোনও রান্নার ঘ্রাণে সাড়া ফেলা মায়ের পুরোনো প্রণয় যেমন কথা বলেপার্বনের দিনে এমনই হেঁটে আসে ব্যথা, উঠে আসে…

red and blue wallpaper

অন্ধকারের জার্নাল

১.ক্ষুধার পরিসরে ক্রমান্বয়ে ফুটপাত বদল করে মানুষের ভেতর মৃতবৎসা জীবন। কবর এক লৌকিক সমাপ্তি, যারও আগে নিভে যায় প্রাণ।২.প্রত্যেক ভ্রমণ শেষে দাঁড়িয়ে থাকা একই দিকে। ঘুঙুরের শরীর জানে কতো আঘাতে তার ঝংকার। বাঈজির নিভৃতে মানুষের ব্যথার কী আশ্চর্য নিনাদ।৩.মেঘলা তরুণীর দিন ঝরে গেলো বৃষ্টির শরীরে। করোটির কালো শ্যাওলায় ছোট্ট বাড়ি। সূর্য ডুবে যায়।৪.চিনতে এতোটুকু ভুল…

white and black American pit bull terrier at daytime

কুকুর

আমিও কুকুর। তুমি ডাকলে আজও দরোজায় এসে দাড়াই তুমি ডাকলে এতোসব দুর্যোগের ভেতর যেনো আজও আমার উৎসব আছে যেনো আমিও রুঢ়তা ভুলে জীভ বের করে দাঁড়িয়ে থাকা সহজ কলমীলতা তুমি ডাকলে আমি আমার ভেতরে আমি ভেজা বিস্কুটের মতো গলে গলে পড়া অথচ কতবার ফিরিয়ে দিয়েছো ডেকে বলেছো, দুঃখটা সেরে গেছে দরোজাটা ওদিকে কতোবার তোমার নিষ্পাপ…

a person standing in front of a giant spider

ভীতি

ব্ল্যাঙ্ককলে উড়ে আসা ভীতির মতো জাপটে রেখেছোএকদা ভালোবেসেছিলে –যতোটা বাসলে নিঃশ্বাসও বিষাক্ত হয় …আর আমি আছি এখানেচারকৌনো টেবিলে বেড়ে রালহা জড়ানো ভাতযার শরীর থেকে উড়ে যাচ্ছে উত্তাপবড় বিষাদ নিয়ে আমাকে গিলছে সময়।

an aerial view of a body of water

লিলিথের ডানা

খুব তৃষ্ণা পেলে দু’হাতের আঁজলা ভরে তোমাকে তুলে নেবো ঠোঁটে, ভ্রুণ ভেঙে শৈল্পিক কারুকার্যেগহন উদার নিসর্গে তোমাকে দেবো হঠাৎ বিকেলমাথা থেকে পায়ের নখ জীভের তুলি আঁকবে প্রেমের শরীর।যেখানে এতোকাল খেলেছেন ঈশ্বররহস্যময় ঘুলঘুলিতে আমরা হাতড়ে ফিরেছি অন্ধকারের উর্বর জমিআমাদের দ্রাঘিমাংশের ক্ষয়ে যাওয়া অলীক আলোবাতাসের মালহারে উদ্বেলিত গোপন বিষাদের রীড অসুখের কোটরে তরতর করে বিস্ময়ের দ্যোতনায় নিজেকে…

red and black train on rail tracks during daytime

স্টেশন

তুই কখনো আমাকে চাসনি,না চেয়েই আমি পুরোটা তোর।অথচ সেজুতি জানেনা তার পাবার অহংকারে কেবলই ফাঁকি।স্টেশনের ক্ষীণ আলোয় চমকে উঠলাম, ভুল দেখছিনা তো!তুই এসে সহাস্যে জনতে চাইলি “কেমন আছ অরুণদা? “গলায় ঢেলা পাকানো অন্ধকার ঠেলে কেবল বলতে পারলাম “ভালো “!একমুহুর্তের জন্য কী পৃথিবীটা এসে থমকে রইলো আমার চারপাশে?বুকের ভেতর এতো কাছাকাছি থাকিস তুইঅথচ হাতছানির দূরত্বে দাঁড়িয়ে…

silhouette of person standing on concrete road with streetlights turned on during nighttime

অনাথ মগ্নতা

তোমাকে ভালোবেসে এখানে দাঁড়িয়ে থাকি হতবুদ্ধি বইয়ের পাতার মতো অপেক্ষা করি আঙুলের এই বুঝি এলে কিছু ধুলো আলগোছে সরিয়ে অপেক্ষায়আমাকে আবৃত্তি করে অপ্রকৃতস্থ যৌবন মাথার ভেতর ভীষণ হৈ চৈ লিখে ফেলি শিহরিত রাত, আমাদের সন্তানেদের ঘুমন্ত মুখতাপহীন বুকে শতশত আগ্নেয়গিরির উত্তাপ…. অনন্ত ইথারে অনর্গলতোমাকে ঠিক তেমনই ভালোবাসিযেমন বেসেছি ঝরা জলপাই পাতার লালশহুরে হাওয়ার বিজন অন্ধকার তোমাকে…

gray top

সেমেট্রি

হাতের শৃঙ্খল খুলে দিলে বাগান বাড়ির দরোজাকরুণ আঙুল কথা রাখতে শিখেছে খুব।করিডোর থেকে  হেঁটে এলে বিকেলপৃথিবীর হেরেমে বাস করা সিসিফাসরা দাঁড়ায় বাসের অপেক্ষায়অফিসের সেমিট্রিতে হাড়গোড় সামলাতে সামলাতে রোগা হৃদপিন্ড  দাঁড়িয়ে থাকো তুমিওপুরনো বন্ধুর সংগে দেখা হলে জানতে চাও “কেমন আছিস? “প্রেমিক আঘাত পেয়েছে শুনলে ছুটে যাওতোমার খবর রাখতে আসেনা কেউ? তোমার জন্য অপেক্ষা করেনা বাড়ি? কেউ বলেনা…